এখন গ্রীষ্মকাল। এ সময়ে শুধু আবহাওয়া নয়, ভূরাজনীতির দিক থেকেও অসহনীয়ভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য, তথা পুরো বিশ্ব। মধ্যপ্রাচ্যের বুকে বারুদের গন্ধ, গাজায় গণহত্যা-যুদ্ধাপরাধ, ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধজাহাজের গর্জন, দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তাল ঢেউয়ের ভেতরে যুদ্ধবিমানের গর্জন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, দক্ষিণ সুদানে অনাহারী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি- এ সবকিছুই যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে একটি ভয়ানক যুদ্ধের। সে যুদ্ধ শুধু ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ নয়। ক্রমেই তা ছড়িয়ে পড়ছে, ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সামরিক শক্তি নিয়ে জড়ো হচ্ছে। রাশিয়া, চীন, তুরস্ক একে একে মুখ খুলছে, হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। আর ইরান? তারা বলছে, ‘আমরা মাথানত করবো না’। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্বের বহু বিশ্লেষকের কণ্ঠে এক ভয়ঙ্কর প্রশ্ন- তবে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসন্ন?
সাগর, আকাশ, স্থল জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভয়ঙ্কর প্রস্তুতি: যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে দু’টি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ মোতায়েন করেছে। তা হলো- ইউএসএস নিমিটজ ও ইউএসএস কার্ল ভিনসন। এই দু’টি যুদ্ধবিমান বহনকারী যুদ্ধজাহাজ এখন মধ্যপ্রাচ্যের পানিতে প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় আছে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আঙ্গুলের ইশারার। এ যুদ্ধজাহাজগুলো কেবল আকারেই বিশাল এমন নয়। একই সঙ্গে একেকটি যেন চলমান যুদ্ধঘাঁটি। প্রতি স্ট্রাইক গ্রুপে ৭০-৮০টি যুদ্ধবিমান, সাবমেরিন, ডেস্ট্রয়ারসহ হাজারো সামরিক সদস্য রয়েছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বি-২ এবং বি-৫২ ধরনের দূরপাল্লার বোমারু বিমান। সাইপ্রাস, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার ও বাহরাইনে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে শক্তি বাড়ানো হচ্ছে। একাধিক ড্রোনঘাঁটি সক্রিয় করা হয়েছে। ইউরোপ থেকেও কিছু ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে ভূমধ্যসাগরে। এমনকি জর্ডানে স্থাপিত টার্মিনাল হাই অলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) ও প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও আপগ্রেড করা হয়েছে। লক্ষ্য একটাই- ইরানকে কোণঠাসা করা, প্রয়োজনে সরাসরি হামলা। মধ্যপ্রাচ্যকে হাতের মুঠোয় রাখার জন্য অনেক আগে থেকেই সাইপ্রাস, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার ও বাহরাইনে মার্কিন ঘাঁটি স্থাপন করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। উদ্দেশ্য, এ অঞ্চলে তাদের স্বার্থ কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার মোকাবিলা করা। অন্যদিকে তাদের হয়ে প্রক্সি রাষ্ট্র ইসরাইলকে অভয় দেয়া। তাদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করা। কিন্তু ওইসব দেশ আবার নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ‘পেটের ভেতরে’ ঘাঁটি বসাতে দিয়েছে। এ কারণেই ইরাকে সাদ্দাম হোসেন, লিবিয়ায় মুয়াম্মার গাদ্দাফি, সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের মতো নেতাদের পতন হয়েছে। এই তিনটি দেশের দিকে তাকান। কি দেখতে পাচ্ছেন? আগের চেয়ে ভালো আছে? সাদ্দাম হোসেন বা গাদ্দাফির সময় ইরাকিরা যেমন ছিলেন, দেশ দু’টি যতটুকু স্থিতিশীল ছিল, তা কি এখন আছে? উল্টো তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত করে বিশৃঙ্খল করে দেয়া হয়েছে ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়াকে। গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত তারা এখন। এ দেশগুলোতে অর্থনীতি বলতে কিছু নেই। যা আছে তা হলো- লুটপাট, দলে দলে সংঘর্ষ, হানাহানি, আধিপত্য। এখানে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে- সাদ্দাম হোসেন, গাদ্দাফি, আসাদ’রা ছিলেন একনায়ক। তারা নিজের জনগণের ওপর বা ভিন্নমতের বিরুদ্ধে কঠোর দমননীতি প্রয়োগ করেছেন। তাদেরকে ক্ষমতা থেকে বাইরের দেশ জোর করে উৎখাত করে দেশগুলোকে গৃহযুদ্ধে ঠেলে দিয়েছে। আর এতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে মধ্যপ্রাচ্যের উল্লিখিত ওইসব দেশ।
ইরানের প্রতিশোধের প্রতিজ্ঞা: ইসরাইলের আকস্মিক হামলায় তেহরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ডের একাধিক কমান্ডার নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে সিরিয়ায় ইরানি ঘাঁটিতে বোমাবর্ষণ হয়েছে একাধিকবার। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল ছুড়েছে গোলান উপত্যকার দিকে। তারা বলছে- এটা কেবল শুরু। আমরা গাজার শিশুদের রক্তের প্রতিশোধ নেব। তেহরান এখন কূটনৈতিক পথে নয়, সামরিক পথেই সমাধান খুঁজছে বলে ধারণা। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি স্পষ্ট বলেছেন- ‘আমরা আত্মসমর্পণ করবো না। ইমানদারদের রক্ত বৃথা যাবে না।’ ওদিকে ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেনের ইরানঘেঁষা গোষ্ঠীগুলোও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। হুতি বিদ্রোহীরা সাম্প্রতিক সময়ে লোহিত সাগরে একাধিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে। ইসরাইল সীমান্তে আবার উত্তেজনা ছড়াচ্ছে লেবাননের যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
রাশিয়া-চীন-তুরস্কের অভিন্ন বার্তা: মস্কো যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি জড়ায়নি। তবে কূটনৈতিকভাবে শক্ত বার্তা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘ইরানে হামলা মানে গোটা অঞ্চলে আগুন জ্বালানো। পশ্চিমাদের এই আগুন ছড়িয়ে পড়বে নিজ ভূখণ্ডেও।’ সিরিয়ায় রুশ ঘাঁটির চারপাশে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ইরানকে উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিতে প্রস্তুত বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে ক্রেমলিন। চীন প্রকাশ্যে বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ধ্বংস করবে। ইরানে হামলা হলে ফল হবে ভয়াবহ। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইরানে ইসরাইলের হামলা প্রসঙ্গে বলেছেন- অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘনের বিরোধিতা করি। চীন তার রেড সি করিডোরে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। বেইজিং জানে, ইরানের পতন মানে মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকান আধিপত্যের স্থায়ী রূপ। আগে থেকেই চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব চরমে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের সময় বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করা থেকেই এই বিরোধ তীব্র হতে থাকে। তার ওপর যুক্ত হয় তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চরম যুদ্ধংদেহী মনোভাব। তাইওয়ানের ওপর সামরিক নজরদারি বৃদ্ধি করেছে চীন। তারা একে তাদের মূল ভূখণ্ড বলে দাবি করে এবং জোর করে হলেও তা চীনের সঙ্গে যুক্ত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। আর এর তীব্র বিরোধী যুক্তরাষ্ট্র। তারা তাইওয়ানের পক্ষ নেয়ার কথা প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছে। বিনিময়ে তাইওয়ানের কাছে বিপুল অর্থের অস্ত্র বিক্রি করেছে। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে এসেও চীনা পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধি করেছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, ‘গাজা নিয়ে আমাদের সহানুভূতি নয়, সশস্ত্র অবস্থান থাকবে। ইরান আক্রান্ত হলে আমরা নীরব থাকবো না।’ যদিও ন্যাটোর সদস্য তুরস্ক, কিন্তু তাদের অবস্থান দিন দিন পশ্চিমাবিরোধী হয়ে উঠছে। রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সমন্বয় করছে আঙ্কারা।
যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ বিভাজন: মার্কিন কংগ্রেসে বিভক্ত মতামত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। রিপাবলিকানদের একাংশ যুদ্ধের পক্ষে। কিন্তু ডেমোক্রে?টদের মধ্যে একটি বড় অংশ যুদ্ধবিরোধী। জনমতও বিভক্ত। অনেকেই আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধের পর নতুন যুদ্ধ চান না। কারণ, ওই দুটি যুদ্ধে তাদের অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ। এই দুটি দেশে যুদ্ধ করতে এসে কয়েক দশক আটকে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাদের শত শত কোটি ডলার খরচ হয়েছে এ খাতে। যে তালেবানদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, শেষ পর্যন্ত তাদের হাতেই দেশ ছেড়ে দিয়ে নিজেদের লেজ গুঁটিয়ে নিয়েছে আফগানিস্তান থেকে। আত্মমর্যাদার জন্য এটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লজ্জার। সেসব স্মৃতি মার্কিনিদের মনে এখনো জ্বল জ্বল করছে। অন্যদিকে, মুসলিম ও প্রগতিশীল সংগঠনগুলো দেশব্যাপী প্রতিবাদ করছে ‘নো ওয়ার অন ইরান’ ব্যানারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ হচ্ছে। সর্বশেষ যুদ্ধের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে হোয়াইট হাউসের সামনে। তাতে বিপুল সংখ্যক মানুষ সমবেত হয়ে যুদ্ধবিরোধী স্লোগান দেয়।
তেলের দাম, বিশ্ববাজার ও জনজীবনে প্রভাব: ইরান-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ মানেই হরমুজ প্রণালি হুমকির মুখে। বিশ্বের শতকরা ৩০ ভাগ তেল সরবরাহ হয় এই পথেই। হরমুজ বন্ধ মানেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম দ্বিগুণ। ইতিমধ্যে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১২০ ডলার ছুঁয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বাজারে- গ্যাস, পেট্রোল, বিদ্যুৎ ও খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। পশ্চিমা দেশগুলোতেও মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে। তবে ধারণা করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র যে রণপ্রস্তুতি নিচ্ছে, তাতে এই প্রণালিকে নিরাপদ রাখার লক্ষ্যও থাকতে পারে।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের রূপরেখা: বিশ্লেষকরা বলছেন- যদি ইরানে পূর্ণাঙ্গ হামলা হয়, তবে ইরান পাল্টা ইসরাইল ও আমেরিকান ঘাঁটিতে আঘাত হানবে। হিজবুল্লাহ ও হুতিরা যুক্ত হবে সম্মিলিত আক্রমণে। রাশিয়া ও চীন সরাসরি না জড়ালেও অস্ত্র ও প্রযুক্তি সহায়তা দিতে পারে। তুরস্ক, পাকিস্তান, এমনকি কাতার ও মালয়েশিয়াও সক্রিয় সমর্থনে আসতে পারে। ইসরাইল পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে চূড়ান্ত ধ্বংস ঠেকাতে। এ অবস্থায় সংঘর্ষ কেবল মধ্যপ্রাচ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। ইউক্রেন যুদ্ধের সমান্তরালে আরেকটি প্রধান ফ্রন্ট খুললে তা হয়ে উঠবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাঠামো।
কূটনৈতিক সমাধানের শেষ চেষ্টা: চীন ও তুরস্ক চেষ্টা করছে একটি কূটনৈতিক চ্যানেল তৈরির। ওমান, কাতার ও সুইজারল্যান্ড এমন এক ‘ব্যাকচ্যানেল’ কথোপকথনের সঙ্গে জড়িত। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মধ্যস্থতায় আগ্রহী হলেও বাস্তব পরিস্থিতি বলছে- সময় শেষ হয়ে আসছে। রাশিয়া-চীন যদি সম্মিলিতভাবে নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার কার্যক্রম আটকে দেয়, তবে কিছুটা সময় পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু যদি ইসরাইল একতরফা হামলা চালায়, তখন আর কোনো আলোচনা টিকে থাকবে না।
মুসলিম বিশ্ব কী করবে: গাজার গণহত্যা ও ইরান হামলার প্রেক্ষাপটে সাধারণ মুসলিম জনগণ ক্ষুব্ধ। বিভিন্ন মুসলিম দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে নিয়মিত। কিন্তু আরব রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান দ্বিধান্বিত। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত আমেরিকার ঘাঁটিকে সহায়তা দিলেও এখন তারা সতর্ক। কারণ যুদ্ধ ছড়ালে তার আঁচ তাদের অর্থনীতি ও নিরাপত্তায় পড়বে। একটি যুক্তফ্রন্ট গঠিত হলে তা হতে পারে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সূচনা। তবে তা কতোটা সম্ভব- তা নির্ভর করছে ইরানের স্থায়িত্ব ও চীন-রাশিয়ার একাত্মতায়।
যুদ্ধ না শান্তি, কোনদিকে বিশ্ব: বিশ্ব এখন একটি চরম সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে এগিয়ে। কিন্তু দেশের ভেতরে নীতির প্রশ্নে বিভক্তি আছে। সেখানে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করা সহ বিভিন্ন ইস্যুতে এই বিভক্তি আরও জোরালো হয়েছে। তারপরও বিশ্ব জুড়ে মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো। অন্যদিকে ইরান কূটনৈতিকভাবে নিঃসঙ্গ। রাশিয়া-চীন এক ঐতিহাসিক মিত্রতা গড়ে তুলেছে। তুরস্ক ও মুসলিম বিশ্ব ধীরে ধীরে এক নতুন জোটে রূপ নিতে পারে- যদি তারা চায়। এই পরিস্থিতিতে যদি কোনো পক্ষ সামরিক দিক দিয়ে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র যদি এক ধাপ অগ্রসর হয়, তবে তা গোটা মানবজাতির জন্য হতে পারে এক বিপর্যয়। ফলে প্রশ্নটি সামনে চলে আসে- তবে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসন্ন? উত্তরটা এখনো অন্ধকারে। কিন্তু প্রস্তুতিটা যেন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।