আ ন্ত র্জা তি ক

মধ্যপ্রাচ্য নীতি কী বদলে যাচ্ছে?

মোহাম্মদ আবুল হোসেন | আন্তর্জাতিক
মে ২৪, ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্য নীতি কী বদলে যাচ্ছে?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তার চারদিনের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ করেছেন। নিয়ে গেছেন শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি। এ সময়ে তাকে দেয়া হয়েছে রাজকীয় মর্যাদায় অভ্যর্থনা। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তাকে রাজপ্রাসাদে নিতে পথে পথে যে আয়োজন করা হয়েছে তা দেখে চোখ আকাশে ওঠার কথা। ট্রাম্প যখন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ সফরে যান, তখন সৌদিরা তাকে রাজকীয় মর্যাদায় অভ্যর্থনা জানায়। তার বিমানকে এফ-১৫ যুদ্ধবিমান দিয়ে পাহারা দেয়া হয়। আরব ঘোড়ায় চড়া প্রহরীদের মোটরকেডে সঙ্গ দেয়া হয়। প্রাসাদে গাড়ির সমান আকারের ঝাড়বাতি ঘেরা এক রাজকীয় মধ্যাহ্নভোজ আয়োজন করা হয়। তবে সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্তটি আসে এক নিরুত্তাপ কক্ষ থেকে। সেখানে ১৪ই মে ট্রাম্প হাত মেলান আহমেদ আল-শারার সঙ্গে। তিনি সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট। এক সময় জিহাদি ছিলেন এবং তার মাথার দাম এক সময় ছিল এক কোটি ডলার। তার এই সাক্ষাৎ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হচ্ছে। কারণ, আহমেদ আল শারা একজন সাধারণ মানুষ নন। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধ করছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। তাদের ভাষায় এসব সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত অনেক ইসলামপন্থি। এদেরকে জিহাদি বলে আখ্যায়িত করা হয়। তেমনই একজন জিহাদি ছিলেন আহমেদ আল শারা। তার সঙ্গে ট্রাম্পের হাত মেলানো, তার প্রশংসা করা বিস্মিত করেছে অনেককে। ট্রাম্পকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যে অভ্যর্থনা দেয়া হয়, তা আধুনিক প্রযুক্তির যুগে হয়তো অনেকেই দেখেছেন। মোটর শোভাযাত্রায় তাকে আতিথেয়তা জানাতে সড়কে ঘোড়ায় আরোহী প্রহরীরা স্বাগত জানান। সফেদ ইসলামিক পোশাকের সওয়ারিরা তাকে বহনকারী গাড়ির পাশে পাশে হেঁটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। প্রাসাদের কাছেই রাখা হয় উটআরোহী। তারাও নানা রকম কৌশল প্রদর্শন করেন। সর্বশেষ প্রাসাদের বাইরে হাতে তলোয়ার নিয়ে রণকৌশলের মাধ্যমে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হয়। এ এক অভাবনীয় দৃশ্য।


গত ২৫ বছরে কোনো মার্কিন ও সিরীয় প্রেসিডেন্টের মধ্যে আহমেদ আল শারার সঙ্গে যে বৈঠক হয়, সেটাই ছিল  প্রথম বৈঠক। যদিও এটি প্রত্যাশিত ছিল, তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে শেষ মুহূর্তে। তার আগের দিন এক প্রকৃত চমক দেখা যায়। একটি বিনিয়োগ ফোরামে দেয়া বক্তৃতায় ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তিনি সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবেন। উল্লেখ্য, দেশটির দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদ গত ডিসেম্বরে ক্ষমতাচ্যুত হন। ট্রাম্পের ওই ঘোষণায় চমকে যান শ্রোতারা। তারা দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানান তাকে। ট্রাম্প বলেন, শুভকামনা, সিরিয়া। আমাদের অসাধারণ কিছু দেখাও। এ খবর পাওয়ার পর সিরিয়া জুড়ে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় উল্লাস করতে থাকে। কারণ, দীর্ঘ সময় গৃহযুদ্ধ, সঙ্গে নিষেধাজ্ঞায় দেশটিতে অর্থনীতি বলতে কিছু নেই বললে বাড়িয়ে বলা হবে না। মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস। তারা ট্রাম্পের ঘোষণায় নতুন করে জীবন সাজানোর উপায় খুঁজে পান। এ জন্যই রাস্তায় রাস্তায় উল্লাস করেন তারা। 


ট্রাম্পের চারদিনের তিন দেশভিত্তিক সফরের মূল লক্ষ্য ছিল বাণিজ্য ও বিনিয়োগ। সৌদি আরবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেন। কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও বিশাল অঙ্কের চুক্তির প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। যদিও এসবের অনেক কিছুই পরবর্তীতে অকার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। সৌদি আরব সিরিয়াসভাবে তাদের অঙ্গীকার করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং খেলাধুলায় শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে- যা তাদের তেলনির্ভর অর্থনীতি বহুমুখীকরণ পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের সামরিক চুক্তি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই চুক্তি দেশটির বার্ষিক প্রতিরক্ষা বাজেট ৭৮ বিলিয়নের প্রায় দ্বিগুণ। তেলের দাম কম থাকায় এই অর্থনীতি চাপে রয়েছে। অনেক অস্ত্র হয়তো আগামী কয়েক বছরেও সরবরাহ হবে না, কিছু হয়তো কখনোই নয়। তবু ট্রাম্পের কাছে এগুলো ছিল বড় গর্বের বিষয়। সৌদি আরব তাকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা বিক্রয়’ প্রচার করার সুযোগ দিয়েছে। ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ স্লোগানকে সামনে নিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে চান। এ জন্য ফেডারেল অনেক খাত থেকে জনবল কর্তন করেছেন। অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। বহু অভিবাসীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন। আরও অনেককে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তার হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য বিশ্বের বহু দেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন, যদিও তা তিন মাসের জন্য আপাতত স্থগিত আছে। এরপর কী হবে তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। ওদিকে মার্কিনিদের অভিযোগ, তার এই নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্যের সংকট দেখা দেবে। দাম বৃদ্ধি পাবে আকাশচুম্বী। তবে ট্রাম্পের যুক্তি এতে বিদেশি পণ্যের আমদানি কমবে। দেশীয় কোম্পানির কদর বাড়বে। তাতে নিজেদের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। সে অন্য প্রসঙ্গ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য মূলত মধ্যপ্রাচ্য সফরে এসেছিলেন। তাতে অনেকটা সফলও হয়েছেন। শত শত কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি নিয়ে গেছেন। পেয়েছেন অস্বাভাবিক অভ্যর্থনা।


আতিথেয়তায় ট্রাম্প-বান্ধব আয়োজন
সৌদি আরব ছোট ছোট বিষয়েও ট্রাম্পকে খুশি করতে জানে। ট্রাম্পের বক্তৃতার সময় বাজানো হয় তার প্রিয় দুটি প্রচারাভিযানের গান: গড ব্লেস দ্য ইউএসএ এবং ওয়াইএমসিএ। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তাকে গলফ কার্টে করে ডিনার পার্টিতে নিয়ে যান। মিডিয়া সেন্টারের বাইরে রাখা ছিল মোবাইল ম্যাকডোনাল্ডস- যদি কোনো ট্রাম্পঘনিষ্ঠ সাংবাদিকের হঠাৎ বার্গার খেতে মন চায়! ট্রাম্পও সৌদিদের ভালোবাসার প্রতিদান দেন। প্রায় এক ঘণ্টার বক্তৃতায় তিনি যুবরাজ মোহাম্মদ এবং তার পিতা বাদশাহ সালমানকে উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় ভাসান। যদিও বাদশাহ সালমানের ব্যক্তিগত অনুপস্থিতি তার স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরব এসেছিলেন ট্রাম্প। সে সময় তিনি মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে সৌদি আরবের রীতি অনুযায়ী ট্রাম্পকে তরবারি হাতে নাচতে দেখা যায়। এবারো সেই মোহাম্মদ বিন সালমান কার্যত সৌদি আরবে ক্ষমতার কেন্দ্রে। তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন ট্রাম্প। মোহাম্মদ বিন সালমানের গৃহীত কর্মকাণ্ডের মাঝে তিনি ঘুমান কীভাবে? এমন প্রশ্ন করে বসেন ট্রাম্প।  


গোল্ডেন এজ এবং পুরনো নীতির অবসান
ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে তার ভাষণে বলেন, এটা মধ্যপ্রাচ্যের একটি সোনালী যুগ।
তিনি প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নন যিনি নতুন যুগের ঘোষণা দিলেন। ২০০৯ সালে বারাক ওবামাও ‘নতুন সূচনা’র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা কার্যত আলোর মুখ দেখেনি। ২০১০ সালের আরব বসন্ত অনেক হিসাব-নিকাশ ওলটপালট করে দেয়। ওবামা বাকিটা সময় সংকট মোকাবিলায় ব্যস্ত ছিলেন। তবে ট্রাম্পের ভাষা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। তিনি গণতন্ত্র বা মানবাধিকার নয়, বরং ‘নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল স্বৈরতন্ত্র’কে প্রশংসা করেন। তিনি আমেরিকান হস্তক্ষেপের নীতিকে দোষারোপ করেন। বলেন, রিয়াদ ও আবুধাবির জৌলুস কোনো ‘নেশন-বিল্ডারদের’ সৃষ্টি নয়। আধুনিক মধ্যপ্রাচ্য গড়ে তুলেছে এখানকার জনগণ নিজেরাই। 


ইসরাইল ও সিরিয়া প্রসঙ্গ
ইসরাইল নিয়ে তার মন্তব্য ছিল সংক্ষিপ্ত। তিনি সৌদি আরবকে আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান। তবে বলেন, নিজেদের সময়মতো সিদ্ধান্ত নিন। এর মাধ্যমে তিনি বুঝিয়ে দেন, সৌদিরা এখনো এই চুক্তিতে যোগ দেয়ার প্রস্তুতিতে নেই। এখানে প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যায় যে, সৌদি আরব গাজাবাসীর পক্ষে। খুব বেশি উচ্চবাচ্য না করলেও তারা গাজাকে, ফিলিস্তিনকে সমর্থন দিচ্ছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর তাদের ঘোর প্রতিপক্ষ ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়েছে। প্রতিষ্ঠা হয়েছে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক। এই ইরান আবার গাজার যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাসকে প্রকাশ্যে সমর্থন করে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ক্ষমতার প্রথম মেয়াদের শেষের দিকে আব্রাহাম অ্যাকর্ড চালু করেন। এর মধ্যদিয়ে ইসরাইলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। ওই সময় কয়েকটি আরব দেশ এই চুক্তির অধীনে ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। কার্যত এর মধ্যদিয়ে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। কিন্তু এখানে ফিলিস্তিনি বা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে কোনো কথা নেই। ফলে সৌদি আরব এখনই আব্রাহাম অ্যাকর্ডে যুক্ত হতে পারছে না নৈতিক কারণে। সেটা হয়তো বুঝতে পেরেছেন ট্রাম্প। এ জন্য তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছে- ‘নিজেদের সময়মতো সিদ্ধান্ত নিন’। তবে সিরিয়া নিয়ে তার পদক্ষেপ বাস্তবে কীভাবে এই নতুন নীতির প্রকাশ ঘটায়, তা পরিষ্কার। নিজ প্রশাসনের যুদ্ধবাজদের মতো উপেক্ষা করে তিনি সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। আহমেদ আল-শারাকে ‘যুবা ও আকর্ষণীয়’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেই ফেলেন, আমাদের পুরনো শত্রুকেও গ্রহণ করা সম্ভব। এর মধ্যদিয়ে স্বার্থের কারণে শত্রুদের সঙ্গেও তিনি গলাগলি ধরতে রাজি- এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। 


ইরান, তুরস্ক ও সৌদির নতুন সমীকরণ
ইরানের দীর্ঘদিনের মিত্র ছিল বাশার আল আসাদের সরকার। তারা সিরিয়ায় শাসন পরিবর্তনে ব্যথিত। তবে ট্রাম্পের নতুন সরকারের প্রতি সৌহার্দ্য দেখে তারা আশাবাদী হতে পারে- যদি শত্রু সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তোলা যায়, তাহলে হয়তো ইরানের ক্ষেত্রেও কিছু সম্ভব। এমনিতেই তো ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অনট্র্যাক, অফট্র্যাকে আলোচনা চলছে। তাতে আশার আলো দেখতে পাচ্ছে ইরান। অন্যদিকে, তুরস্ক ও সৌদি আরব- যাদের মধ্যে দীর্ঘ প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে- তারা একত্রে আহমেদ আল শারাকে সমর্থন করেছে। ট্রাম্প স্বীকার করেন, নিষেধাজ্ঞা তোলার সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ ও প্রেসিডেন্ট এরদোগানের পরামর্শে।


টিকে থাকবে তো এই নীতি?
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো- এই নতুন ট্রাম্পনীতি কতোদিন টিকবে? 
মাত্র দুই মাস আগেও তিনি ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অনির্দিষ্টকালের বিমান হামলার নির্দেশ দেন। তিনি ইসরাইলকে গাজা যুদ্ধ থামাতে বলেননি। অথচ এখন বলছেন, গাজার মানুষ আরও ভালো ভবিষ্যতের দাবিদার। গাজায় মানুষ অভুক্ত আছে। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো, মধ্যপ্রাচ্য সফরে এলেও তিনি ইসরাইলের কোনো নেতাকে সেখানে ডাকেননি বা ইসরাইলের কোনো নেতার সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করেননি। ট্রাম্প স্পষ্ট বুঝতে পেরেছেন- তার মধ্যপ্রাচ্য সফর হলো অর্থ ও বিনিয়োগ সংগ্রহ করা। তার দেশে যে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্যরা বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে তারা মুসলিম। গাজা তথা ফিলিস্তিনি নির্যাতিত মুসলিমদের প্রতি তাদের সফট কর্ণার আছে। তাদেরকে ক্ষেপিয়ে তোলা যাবে না। তাহলে তার দেশে শত শত কোটি ডলারের বিনিয়োগই মাটি হতে পারে। অথচ এক সময় তিনি গাজাকে মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা বানানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন- গাজাকে যুক্তরাষ্ট্র কিনে নেবে। দখল করবে। তারপর এটাকে মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা বানানো হবে। কিন্তু এখন  সেই ট্রাম্পই বলছেন, গাজার মানুষ আরও ভালো ভবিষ্যতের দাবিদার। তারা অনাহারে আছেন। ট্রাম্পের সফরে ইসরাইল না থাকায়  দেশটির নেতারা ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। চলছে নতুন সব সমীকরণের হিসাব-নিকাশ। এমন অবস্থায় আলোচনা হচ্ছে- ট্রাম্পের উপসাগরীয় সফর যেন তার মধ্যপ্রাচ্য নীতির ‘রিস্টার্ট’। তবে তার ইতিহাস বলে- স্থিতিশীলতা ও ধারাবাহিকতা তার শক্ত দিক নয়। এই নীতিও হয়তো আবার বদলে যাবে, অথবা পুরোপুরি পরিত্যক্ত হয়ে যাবে। 

আন্তর্জাতিক'র অন্যান্য খবর