এক বহুমুখী সংকট ঘিরে রেখেছে আমাদের সর্বত্র। সুখবর নেই কোথাও। শিল্পায়ন স্থবির। বেকারত্ব বাড়ছে। একমাত্র রেমিট্যান্সই ভরসা। আইএমএফের ঋণ পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে দ্বিধার নিরসন হয়নি। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাষ বলছে, জিডিপি কমে যাবে। অর্থনীতির বাইরে অস্থির রাজনীতিও। সংস্কার নিয়ে গঠিত ঐকমত্য কমিশনের সিরিজ বৈঠক শেষ হওয়ার পথে। অপেক্ষা জুলাই সনদের। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনো সকল ইস্যুতে ঐকমত্য হয়নি। এর সমাধান কীভাবে হবে তা নিয়েই কাজ করছে কমিশন।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সকল পক্ষকে সমঝোতায় আনার কৌশলটিই বা কি হবে? জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যেই বুধবার রাতে সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের দেশত্যাগ নিয়ে তোলপাড় চলছে। চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। এনসিপি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। এনসিপি’র সঙ্গে যোগ দিয়েছে ছাত্রশিবির ও এবি পার্টিও। একজন উপদেষ্টা ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগের দুই সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিষিদ্ধ প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন ফেসবুক স্ট্যাটাসে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংস জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে সরকার।
বিএনপি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ইস্যুতে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান শুক্রবারই বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন ও সরকার নিতে পারে। আমরা এই সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক না। দেখার বিষয় কোথাকার জল কোথায় গিয়ে গড়ায়? সবকিছুর বাইরে রাজনীতিতে ইতিবাচক ঘটনা হচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা। রাজপথে নেতাকর্মীদের ভালোবাসার জোয়ারে সিক্ত হয়েছেন তিনি।
দেশের রাজনীতির আলোচনার বাইরে বড় দুঃসংবাদ বয়ে নিয়ে এসেছে ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধাবস্থা। ২২শে এপ্রিল পেহেলগামে ২৬ জন পর্যটককে মর্মান্তিকভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। তা নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা নিরসনে ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধই কি বিকল্প ছিল? পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন দু’টি দেশের মধ্যে থেকে থেকে চলছে গোলাগুলি। এই যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হবে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি। আমরা যুদ্ধ নয়, শান্তির পক্ষে। আসুন, প্রার্থনা করি শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য।
